নববর্ষের বাজার ধরতে প্রস্তুতি ফুল ব্যবসায়ীদের

নববর্ষের বাজার ধরতে প্রস্তুতি ফুল ব্যবসায়ীদের

নগরীতেরজনীগন্ধা আসে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, কুমিল্লা থেকে। স্থানীয় কয়েকটি এলাকা থেকেও আসে। তবে, পরিমাণে খুব বেশি নয়। গোলাপ ফুল আসে যশোর, ঢাকার সাভার, গাজিপুর এবং কালিয়াকৈর থেকে।
কৃষিবিদদের মতে বাংলাদেশের মাটি ফুল চাষের বেশ উপযোগী। আন্তর্জাতিক বাজারেও বাংলাদেশের ফুলের চাহিদা ব্যাপক। প্রতিবছরই এই বাজার ক্রমবর্ধমান। কিন্তু সে তুলনায় রপ্তানি কম। রজনীগন্ধা ও গোলাপ রপ্তানি হচ্ছে লন্ডন, সিঙ্গাপুর, সৌদি আরব, হল্যান্ড এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে। এক তথ্যে জানা যায়, বিশ্বে বছরে প্রায় আড়াই হাজার কোটি ডলার মূল্যের ফুল বেচাকেনা হয়। বাংলাদেশের ফুল চাষী ও ব্যবসায়ীরা যথাযথ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই রপ্তানি বাজার থেকে প্রচুর আয় করতে পারে। আমাদের প্রতিবেশী ভারতে ফুল চাষকে উৎসাহিত করার জন্য ভর্তুকি ব্যবস্থা আছে।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে এই ভর্তুকির পরিমাণ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। বাণিজ্যিকভাবে ফুল উৎপাদনের জন্য ভারতের মতো আমাদের দেশেও ভর্তুকি ব্যবস্থা চালু করা যায়। ভারতে টাটা এবং বিড়লার মতো বড় মাপের ব্যবসায়ীরা ফুলের বাণিজ্যিক চাষ করছে। ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারও অনেক বড়। এই চাহিদা পূরণ করেও তারা রপ্তানি করছে। বর্তমানে নেদারল্যান্ডস ফুলের বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশ। বাংলা নববর্ষ-পহেলা বৈশাখে এবারে বেশ ভালো মুনাফার আশা করছেন ফুল ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে তাদের কাছে আসতে শুরু করেছে অগ্রিম ফরমায়েশ। চেরাগী পাহাড়, নন্দনকানন থেকে শুরু করে নগরীর বিভিন্ন ফুলের বাজারসমূহ সরগরম হয়ে ওঠেছে। অবশ্য শুধুমাত্র নগরী নয়, উপজেলার বড় বড় বাজারেও তাজা ফুলের দোকান হয়েছে। সেখানেও বাংলা নববর্ষের আয়োজন ফুলেল করতে দোকানিরা প্রস্তুত। যে কোন উৎসবে বেড়ে যায় ফুলের চাহিদা। বর্ষবরণ, পহেলা ফাল্গুন, সভা-সমাবেশ, বিয়ে বা জন্মদিন, কোন উৎসব পল্লী অঞ্চলেও আজকাল ফুল ছাড়া রঙিন হয় না।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির পরিসংখ্যান অনুসারে দেশে ৮৫০ কোটি টাকার ফুলের বাজার। ২৪ জেলার ১২ হাজার একর জমিতে ফুলের চাষ হচ্ছে বাণিজ্যিকভাবে। এর সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ২০ লাখ মানুষ জড়িত। চেরাগী পাহাড়ের ব্যবসায়ীদের কয়েকজন জানালেন, এবারে এখন পর্যন্ত যে অবস্থা তাতে পহেলা বৈশাখের বাজার থেকে ভাল মুনাফা আশা করা যাচ্ছে। এই উৎসবের চাহিদা অনুসারে ফুল সরবরাহের জন্য প্রত্যেক ব্যবসায়ী প্রস্তুতি নিয়েছেন। অবশ্য রজনীগন্ধা, গোলাপ ও গাঁদা ফুলের চাহিদা সারাবছর থাকে। আরও জানান, সাধারণত ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বছরের এ সময়ে সবচেয়ে বেশি ফুলের ব্যবসা হয়।