Sat. Apr 20th, 2024

ঝিনাইদহ নিউজ

সবার আগে সর্বশেষ

ধর্ষকরা কি জঙ্গিদের চেয়েও শক্তিশালী?

1 min read
ধর্ষকরা কি জঙ্গিদের চেয়েও শক্তিশালী?

ধর্ষকরা কি জঙ্গিদের চেয়েও শক্তিশালী?

ধর্ষকরা কি জঙ্গিদের চেয়েও শক্তিশালী?
ধর্ষকরা কি জঙ্গিদের চেয়েও শক্তিশালী?

আমাদের দেশে বর্তমানে এত ইস্যু যে কোনটা রেখে কোনটা নিয়ে কথা বলবো সেটাই ভেবে পাচ্ছি না। যদি ইস্যুগুলোকে নিয়ে গণনা শুরু করি তাহলে দেখা যাবে আমাদের দেশের আয়তনের তুলনায় ইস্যুই বেশি। যাই হোক, আমি কোনো ইস্যু নিয়ে কথা বলবো না। এত ইস্যুর মাঝে আমরা আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের বীরত্বের জন্য প্রশংসা তো দূরে থাক, আমাদের জন্য যে এতটা স্বস্তির সংবাদ নিয়ে এলো তার জন্য একটা ধন্যবাদ দিতে পর্যন্ত ভুলে গেছি। তবে, আমি এইখানে তাদের ধন্যবাদ দেবার জন্য কিছু লিখতে বসিনি বরং তাদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলতে এসেছি।

আপনারা জানেন এইতো কিছুদিন আগেই আমরা আপনাদের কি পরিমাণ গালাগাল দিয়েছি? শুধু কি গালাগাল, আপনাদের এক এক জনের যোগ্যতা নিয়ে পর্যন্ত আমরা চুলচেরা বিশ্লেষণ করে ছেড়েছি। রাস্তা- ঘাটে কোনো পুলিশ দেখলে আমরা তিরস্কার করে কথা বলেছি। এক কথায় পুলিশ শব্দটা আমাদের কাছে একাধারে একটা  গালি আর একটা মজার শব্দে ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্ত এই আপনারাই এখন আমাদের কাছে এক একটা সোনার টুকরা, এক একটা হীরে। আসলে আমি জানি  না কেমন করে বললে, কোন শব্দ ব্যবহার করলে আপনাদের প্রাপ্য প্রশংসা করা হবে।

গুলশানে যখন প্রথম জঙ্গিরা হামলা করে তখন আমরা সাধারণ জনগণরা একটা প্রাইমারি আতংকে ছিলাম। মনে হয়েছে হয়তো অন্য সব ঘটনার মত এটাও একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা, দুইদিন পর সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্ত ঈদের জামাতে শোলাকিয়াতে যখন হামলা হলো তখন আর এই ঘটনাকে  বিচ্ছিন্ন মনে হয় নাই আমাদের। এর মঝে আবার ছিলো জঙ্গিদের ভিডিও হুমকি। তখন আমরা পুরো আতংকে বসবাস করা শুরু করেছি। রাস্তা-ঘাটে, অফিস-আদালতে সব জায়গাতে মনে হচ্ছিলো এই বুঝি হামলা হচ্ছে! আমরা সবাই একধরনের ট্রমার মধ্যে ছিলাম। আমরা সবাই কেমন মানুষিক অস্তিরতার মধ্যে ছিলাম সেই অবস্থার কথা বলে, লিখে কোনোভাবেই বলা আমার পক্ষে সম্ভব না।

আলহামদুলিল্লাহ, এখন আমরা স্বস্তির মধ্যে বসবাস করছি আর জঙ্গিরা বসবাস করছে আতংকের মাঝে। যে কাজটা কোনো দেশই করতে পারলো না সে কাজটা কে করে দেখালো? অবশই আপনারা, কাজটা কিন্ত আমার মতো বাংলাদেশের কোনো সাধারণ জনগণ করে নাই, করেছেন এই আপনারাই  আমাদের  আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, আমাদের  পুলিশ, যাদেরকে নিয়ে আমরা সাধারণ জনগণ  ট্রল বানাতাম! কি অসাধারণ সাফল্য, যে জঙ্গির নেতাকে ধরার জন্য ২০লাখ টাকা পর্যন্ত পুরস্কার ঘোষণা করলো তাকেও কারো কোনো সাহায্য ছাড়াই  নিজেরাই ধরলো। ওরা আমাদের দেশে আক্রমণ করার জন্য অন্য দেশ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসেছে, দিনের পর দিন মাসের পর মাস পরিকল্পনা বানিয়েছে।  আর, মাত্র দুই মাসের মধ্যে আপনারা ওদের মূল পর্যন্ত ধরে ফেলেছেন। সেই শক্তি, সেই সাহস, সেই মনোবল আর সেই বুকের পাটা না থাকলে কি এটা সম্ভব?

এখন আমি কিছু আমার  মনের কথা বলি। আপনারা নিশ্চয় জানেন আমরা মেয়েরা পথে-ঘাটে, অফিস-আদালতে, মার্কেটে বিভিন্ন জায়গায় সেক্সচুয়াল হেরাসমেন্টের শিকার হই। আপনাদের কাছে সব কয়টা অভিযোগ পৌঁছায় না, এটা কি আপনারা জানেন? এখন কথা হচ্ছে আপনাদের কাছে অভিযোগ না পৌঁছালে আপনারা কেমন করে জানবেন কে কোথায় কেমন করে হেরাসমেন্টের শিকার হচ্ছে! আচ্ছা, যে কয়টা অভিযোগ আপনাদের কাছে গেছে সব কয়টার কি বিচার হয়েছে?  আচ্ছা কোনো একটা ধর্ষকের কি ফাঁসি হয়েছে এখন পর্যন্ত? ফাঁসির রায় হওয়া আর ফাঁসি কার্যকর হওয়া কিন্ত এক নয়। এই নরপশুদের বিচার হাওয়া তো দূরে থাকে, এরা তো গ্রেপ্তারই হয় না শুধু এই জন্য বেশিরভাগ অভিভাবকেরা আইনের কাছে যায় না। তারা তখন তাদের মেয়ের পড়াশোনা বন্ধ করে বিয়ে দিয়ে দেয়।

একদিকে হচ্ছে বাল্যবিবাহ যেটা আমাদের আইনেই বিপক্ষে আর অন্য দিকে হচ্ছে কতগুলো স্বপ্নের অকাল মৃত্যু যেটা আবার আমাদের বিবেকের বিপক্ষে। অন্য দিকে, ধর্ষক যে ধর্ষণ করেই ক্ষান্ত  হচ্ছে তা কিন্ত না, আবার মেয়েটা আর তার পরিবারকে ব্ল্যাকমেইল করছে বিভিন্ন ভাবে। এখন তো আবার ধর্ষকদের আরেক মজা, ধর্ষণ করার সময় ভিডিও করে রাখে সেটা দিয়েও চলে ব্ল্যাকমেইলিং, আবার সোশ্যাল মিডিয়াতে ছেড়ে দিচ্ছে । মোট কথা, এরা  সর্বক্ষেত্রে এখন বিরাজমান।  এদের বিরুদ্ধে তো আইন আছে তাহলে এরা কেমন করে এত সাহস নিয়ে এই সমাজে ঘুরে বেড়াচ্ছে? বলতে পারেন? আপনারা তো  ১৬কোটি মানুষকে স্বস্তি এনে দিলেন খুব অল্প সময়ে। তাহলে বিপুলসংখ্যক নারীকে হারাসমেন্ট থেকে বাঁচাতে পারবেন না? এখন একটা প্রশ্ন আসতে পারে যে আপনারা কি  আমাদের সাথে সাথে থেকে আমাদের হারাসমেন্ট থেকে বাঁচাবেন?

আপনারা এই ধর্ষক আর ইভটিজারদের শাস্তি দেন। খুব কঠিন শাস্তি যেনো অন্য কারো মনে এমন ঘৃণ্য অপরাধ করার ইচ্ছে আসার আগেই ১০৪ডিগ্রি জ্বর চলে আসে। এটা কি আপনাদের জন্য খুব কঠিন কাজ?যদি দুর্ধর্ষ জঙ্গিদের দমন করতে পারেন তাহলে ধর্ষকদের কেন পারবেন না? নাকি এমন সব অপরাধীরা অনেক বেশি শক্তিশালী? আপনাদের থেকেও? আমরা এখন বিশ্বাস করি আপনারা সারা বিশ্বের যে কেনো শক্তির থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী আর এরা তো অপরাধী, এদের শক্তি আর কতদূর? আমরা এখন অপেক্ষা করছি এই নরপশুদের কঠিনতম শাস্তি দেখার জন্য। যেদিন একটা ধর্ষকের গলায় ফাঁসির দড়ি উঠবে সেদিন আবার সারাদেশে বিজয় উৎসব হবে। সারাবিশ্ব দেখবে বাংলাদেশের আইনে কোনো অপরাধের ঠাঁই নাই। সব অপরাধীর মনে এক আতংকের নাম আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

লিখেছেনঃ ফারজানা আক্তার 
সৌজন্যেঃ jagonews24.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *