মধু সংগ্রহে গিয়ে ফিরছে না চাকে আর মৌমাছি
1 min read![](http://www.jhenaidahnews.com/wp-content/uploads/2017/05/images.jpg)
বৈশ্বিক উষ্ণতা, অপরিকল্পিত নগরায়ন, বন ধ্বংসের পাশাপাশি অধিক ফলনের আশায় ফসলে ব্যবহৃত বিষাক্ত কীটনাশকে মারা যাচ্ছে হাজার হাজার মৌমাছি। বসন্তের এই সময়ে আম, লিচু সহ বিভিন্ন ফলের পরাগায়ন সহ মধু সংগ্রহে গিয়ে আর মৌচাকে ফিরছে না খাদ্যশৃঙ্খলের অন্যতম ক্ষুদ্র প্রাণী মৌমাছি। বিষ্মিত সচেতন মহল। আর মৌমাছি কমে গেলে কৃষিক্ষেত্রে চরম বিপর্যয়ের আশংকা করছে বিশেষজ্ঞরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঔষুধ বিক্রেতা জানান, আম-লিচুসহ বিভিন্ন ফলের মুকুলে বিষাক্ত কীটনাশক ক্যারাটে, নাজেব এ্যামামেকটিন, ল্যামডা সাই হ্যালোজিন এবং আরও বেশ কিছু নিষিদ্ধ বিভিন্ন ঔষধ ব্যবহার করা হয়। সাধারণত আমের মুক’ল, লিচুর মুক’লসহ বিভিন্ন ধরনের ফলের মুক’ল আসার সময় এ বিক্রি বেড়ে যায়।
পরিবেশবিদ মাসুদ আহম্মেদ সন্জু জানান, যদি মৌমাছি হারিয়ে যায়, তবে আমাদের ফসল উৎপাদনে পরাগায়ণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রাকৃতিক কাজ যা মৌমাছি করে থাকে তা আমাদের কৃত্রিমভাবে করতে হবে। এতে এক দিকে যেমন বাড়তি অর্থনৈতিক চাপ বাড়বে তেমনি অন্যদিকে পরিবেশের ভাারসম্য অবশ্যই নষ্ট হবে।
ঝিনাইদহের সব উপজেলার বাগানগুলোতে মধু সংগ্রহে গিয়ে মারা যাচ্ছে মৌমাছি। এখানে দরকার ব্যাপক সচেতনাতা সৃষ্টি করা। আর সাথে দরকার সরকারী শক্ত পদক্ষেপ।
মানবধীকার কর্মী নাসরিন আকতার জানান, আমরা মানুষের মানবাধীকার নিয়ে সোচ্ছার কিন্তু এই অতিপ্রয়োজনীয় ক্ষুদ্র প্রাণীটিকে যে কী নির্মমভাবে ইচ্ছেমতো হত্যা করা হচ্ছে তার দিকে কররই কোন খেয়াল নেই। বিষাক্ত কীটনাশকে বায়ু দূষণ যতই বাড়ছে মৌমাছিদের খাদ্য খোঁজার ক্ষমতা ততই খর্ব হচ্ছে, ফলে দেশজুড়ে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
শুধু পরাগায়ন আর মধু জমানো নয় মৌমাছি কিছু গাছ-পালা নতুন করে জন্মাতে সাহায্য করে, এক্ষেত্রে মৌমাছি না থাকলে ওইসব গাছ-পালা জন্মানো কমে যাবে। এতে করে যেসব প্রাণী ওইসব গাছ-পালা থেকে সরাসরি উপকৃত হয় এবং বেঁচে থাকতে ওইসব গাছ-পালা খেয়ে থাকে, তারা খাদ্য অভাবে মারা যাবে। এতে করে খাদ্য শৃঙ্খল ও জীববৈচিত্রে ভয়ংকর প্রভাব পড়বে বলে আশংকা করেছেন ঝিনাইদহ সরকারী কেশবচন্দ্র মহাবিদ্যালয় কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মোঃ রহমত আলী।
ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক শাহ মোঃ আকরামুল হক জানান, কীটপতঙ্গ যখন ফুল থেকে ফুলে ওড়াউড়ি করে তখন নিজের অজান্তে পরাগায়নের কাজটি করে যায়। আবার মরে যাওয়া গাছ, ঝরে পড়া পাতা, ফুল-ফল মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে মাটির পুষ্টি ফিরিয়ে দিতেও সাহায্য করে কীটপতঙ্গ। কোনো কোনো মানুষের জন্য খাদ্য ও বসতি তৈরির কাজেও সাহায্য করে ওরা। মৌমাছি গড়ে তোলা মৌচাক এর মধু ,মোম ঔষধ সহ নানা কাজে লাগে মানুষের জন্য।
তিনি আরও জানান, মৌমাছী সাধারণত দিনের আলোয় মধূ সংগ্রহ করে। তাই আমরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে সকল কৃষক ভাইদের বলেছি তার যেন অবশ্যই বিকালে ও সন্ধ্যায় গাছে বালাইনাশক বা বিভিন্ন ঔষুধ প্রেরন করে।