Sat. Apr 20th, 2024

ঝিনাইদহ নিউজ

সবার আগে সর্বশেষ

অজানা রোগে আক্রান্ত শিশুকে ফেলে গেলেন বাবা-মা

1 min read

অজানা রোগে আক্রান্ত শিশুকে ফেলে গেলেন বাবা-মা

ঝিনাইদহ নিউজ: রোগে আক্রান্ত হয়ে ধীরে ধীরে প্রায় কংকালে পরিণত হওয়া চার বছর বয়সী শিশু আবির দিনদিন মৃত্যুর দিকে যাচ্ছে। দিন দিন তার শরীর অস্বাভাবিক রুপ নিচ্ছে । এমন অবস্থায় শিশুটির শেষ ভরসা হওয়ার কথা বাবা-মা কিন্তু সেই মা-বাবাও তাকে ফেলে পালিয়ে গেছে । এদিকে শিশু আবিরকে বাঁচাতে চিকিৎসার জন্য জনপ্রতিনিধিসহ অনেকের কাছে ছুটে যাচ্ছেন অসহায় শিশুটির নান-নানি কিন্তু কেউ তার পাশে এসে দাঁড়ায়নি।


আবির ও আপন দুই ভাই। বাবা-মায়ের কাছে আদরে আছে ছোট ভাই আপন। কিন্তু আবিরের জোটেনি বাবা-মায়ের আদর ¯েœহ। পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, আবিরের জন্মের আট মাস বয়সে টিকা দেওয়ার পর থেকে খিচুনি আর জ্বর শুরু হয়। এরপর ধিরে ধিরে শরীর শুকিয়ে যেতে শুরু করে। ছোট্ট শরীরের সব হাড়গুলো বেরিয়ে গেছে। শরীরের সমস্ত শিরাগুলো টান ধরেছে ফলে স্বাভাবিকভাবে হাত-পা নড়াচড়া করতে পারে না আবির। দেখতে অনেকটা বৃদ্ধ মানুষের মতো। এখন সে হাড্ডিসার শরীর নিয়ে বিছানায় মৃত্যুর মুখোমুখি। ভাল কোন চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হতে না পারায় তার রোগটি কি তা অজানাই রয়ে গেছে ।


অসুস্থ্য হওয়ার পর আবিরের বাব-মা ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে কাশিপুর গ্রামে নানা- নানির কাছে ফেলে গেছে আবিরকে। এরপর থেকে আবিরের আর খোঁজ রাখেনি বাবা-মা। দরিদ্র দিনমজুর নানা লিয়াকত আলী ও নানি মঞ্জুরা বেগম এখন আবিরের একমাত্র ভরসা।
নানি মঞ্জুরা বেগম জানায়, পাঁচ বছর আগে যশোর সদর উপজেলার সাতমাইল এলাকার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের আলাউদ্দীনের ছেলে, দিন মজুর আল-আমিনের সাথে মেয়ে রতনা খাতুনের বিয়ে হয়। এরপর এক বছরের মাথায় আবিররের জন্ম হয়। জন্মের সুস্থ্য ছিল আবির। কিন্তু জন্মের আট মাস পর স্থানীয় টিকাদান কেন্দ্রে নিয়ে টিকা দেওয়ার পর থেকে প্রচন্ড খিঁচুনি শুরু হয়। সাথে অনেক জ¦র। এরপর বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে নেওয়া হয়েছে কিন্তু কোন উন্নতি হয়নি। পরে খিঁচুনি কমলেও শরীর শুকিয়ে যেতে থাকে। শিরাগুলো টান পড়তে থাকে, বাকা হয়ে যাচ্ছে হাত পা। ফলে স্বাভাবিকভাবে হাত-পা নড়াচড়া করতে পারে না আবির। মঞ্জুরা আরো জানায়, অসুস্থ্য হওয়ার পর মেয়ে জামাই নাতি আবিরকে আমাদের কাছে রেখে চলে যায়। এরপর থেকেই আমাদের কাছে রয়েছে। পরে মেয়ের ঘরে আবার একটা সন্তান আসে “আপন” তার বয়স এখন দেড় বছর। আপন কে নিয়েই মেয়ে জামাই আছে অথচ আমাদের কাছে রেখে যাওয়া অসুস্থ বড় ছেলের কোন খোঁজখবর রাখে না তারা।


প্রতিবেশীরা বলেন, তার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। যা দিনমজুর দাদা লিয়াকত আলীর পক্ষে কোনোভাবেই টাকা যোগাড় করা সম্ভব না। তাই শিশুটিকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে।
দিনমজুর নানা লিয়াকত আলী বলেন, নাতির চেহারা অস্বাভাবিক হওয়ায় কেউ তার কাছে যেতে চাই না। আমরা দুজনই তার দেখভাল করি। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন, গোসল ও খাবার খায়িয়ে দিতে হয় তার। স্থানীয় অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। দিনে দিনে শুকিয়ে যাচ্ছে। এখন তার খাবার ও ওষুধ কেনা এবং ডাক্তার দেখানোর টাকা যোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর প্রহর গুণছে আবির। আরো বলেন, ডাক্তার এর কাছে নিতে হলে নানা সমস্যায় পড়তে হয় তাদের। অনেকে ছেলে ধরা মনে করে। একবার ডাক্তাররের কাছে যাওয়ার পথে যশোর নওয়াপাড়া স্টেশন থেকে লোকজন ছেলে ধরা মনে করে আমাদের আটকে রাখে। পরে খোঁজ খবর নিয়ে ছেড়ে দেয়।


নানা লিয়াকত আলী সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি জানান, বিত্তবানরা সহযোগিতার হাত বাড়ালেই কেবল বাপ-মা হারা আবির সুস্থ হয়ে আবার স্বভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে। সাহায্যের জন্যে বিকাশ নম্বর- ০১৭৮৯ ০০৯১৬৫ আর যোগাযোগের জন্যে ০১৭৩৪ ৬৪৪৪৯৯।
এব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. অপূর্ব কুমার সাহা শিশুটির ছবি দেখে বলেন, পরীক্ষা-নিরিক্ষা ছাড়া বলা যাবে না এটা কি ধরণের রোগ । পরিক্ষা নিরিক্ষা করে দেখতে হবে কি কারণে এমন হয়েছে। তিনি আরো জানান, টিকা দেওয়ার জন্য এমনটা হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *