Tue. Apr 30th, 2024

ঝিনাইদহ নিউজ

সবার আগে সর্বশেষ

ঝিনাইদহে ৪০ স্কুলে অবকাঠামো সমস্যা ও শিক্ষকসংকট

1 min read

ঝিনাইদহে ৪০ স্কুলে অবকাঠামো সমস্যা ও শিক্ষকসংকট

ঝিনাইদহে ৪০ স্কুলে অবকাঠামো সমস্যা ও শিক্ষকসংকট
ঝিনাইদহে ৪০ স্কুলে অবকাঠামো সমস্যা ও শিক্ষকসংকট

ঝিনাইদহে তিন বছর আগে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর অনুমতি পায় ছয়টি বিদ্যালয়। কিন্তু অবকাঠামো সমস্যা আর শিক্ষকস্বল্পতার কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো সফলতা দেখাতে পারেনি। এর মধ্যে চলতি বছর আরও ৩৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় জেলার ছয়টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানোর অনুমতি দেয়। বিদ্যালয়গুলো হচ্ছে সদর উপজেলার ফুরসন্ধী, কালীগঞ্জের দামোদরপুর, কোটচাঁদপুরের লক্ষ্মীকুণ্ডু, মহেশপুরের কুশাডাঙ্গা, শৈলকুপার কবিরপুর ও হরিণাকুণ্ডুর কাপাশহাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বলছেন, অবকাঠামো সমস্যা আর শিক্ষকস্বল্পতার কারণে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত চালানো তাঁদের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়ছে।

২০১৬ সালে এই তালিকায় আরও ৩৪টি বিদ্যালয়ের নাম দেওয়া হয়। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ছয়টি, কালীগঞ্জে ছয়টি, কোটচাঁদপুরে তিনটি, মহেশপুরে ছয়টি, শৈলকুপায় আটটি ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় পাঁচটি বিদ্যালয় আছে।

কালীগঞ্জের দামোদরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, ষষ্ঠ শ্রেণিতে সাতজন ক্লাস করছে। শিক্ষক সুমন বিশ্বাস ক্লাস নিচ্ছেন। চাটাই দিয়ে ভাগ করা কক্ষের আরেক পাশে সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির চারজন শিক্ষক সুমনের জন্য অপেক্ষা করছেন।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রকিব উদ্দিন জানান, ২০১৩ সালে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ২৭ জন ভর্তি হয়েছিল। কিন্তু শিক্ষকস্বল্পতার কারণে ঠিকমতো ক্লাস নিতে না পারায় অনেকে অন্যত্র চলে গেছে। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে মাত্র ৯ জন ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয়। কিন্তু পঞ্চম শ্রেণিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রতিবছর ৪৫ থেকে ৫০ জন থাকে।

শিক্ষকেরা বলেন, স্কুলে বর্তমানে ২৩২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক আছেন মাত্র পাঁচজন। একজন দীর্ঘদিন ধরে প্রেষণে অন্যত্র আছেন। একজন শিক্ষক মাধ্যমিক পর্যায়ের ক্লাসগুলো নেন। এর মধ্যে বিদ্যালয়ে মাত্র চারটি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। কিন্তু দরকার কমপক্ষে ছয়টি।

হরিণাকুণ্ডুর কাপাশহাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েও শ্রেণিকক্ষের সংকট রয়েছে। প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, সাতটি ক্লাস একসঙ্গে চালাতে হয়, কিন্তু কক্ষ আছে ছয়টি। যে ছয়টি কক্ষ রয়েছে তার মধ্যে তিনটি পুরোনো টিনশেডের। সামান্য বৃষ্টি হলে সেখানে ক্লাস নেওয়া যায় না।

তিনি আরও বলেন, এ বিদ্যালয়ে ৩৪২ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। আর ষষ্ঠ শ্রেণিতে এ বছর ৩১ জন ভর্তি হয়েছে। দিন দিন শিক্ষার্থী কমছে। বর্তমানে সপ্তম শ্রেণিতে ২৪, অষ্টম শ্রেণিতে ৪১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক আছেন ১০ জন।

কোটচাঁদপুর উপজেলার লক্ষ্মীকুণ্ডু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাখাওয়াত হোসেন বলেন, তাঁর প্রতিষ্ঠানে ৫৫৯ জন শিক্ষার্থী পড়ছে। শ্রেণিকক্ষসংকট আছে। মেয়েদের জন্য পৃথক বাথরুম ও কমনরুমের দরকার। কিন্তু ব্যবস্থা করতে পারছেন না।

হরিণাকুণ্ডু উপজেলার হামিরহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আনছার আলী বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। তাহলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানোর সুফল পাওয়া যাবে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান বলেন, শিক্ষকসংকট অনেকটা কমে এসেছে। অল্পদিনে আরও কমে যাবে। ওই স্কুলগুলোতে নতুন ভবন এবং মেয়েদের জন্য পৃথক বাথরুমের বিষয়টি তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *