Mon. May 6th, 2024

ঝিনাইদহ নিউজ

সবার আগে সর্বশেষ

মুক্তিযুদ্ধা দুখী মন্ডলের ৮৫তেও ভাতা জোটেনি

1 min read

মুক্তিযুদ্ধা দুখী মন্ডলের ৮৫তেও ভাতা জোটেনি

মুক্তিযুদ্ধা দুখী মন্ডলের ৮৫তেও ভাতা জোটেনি
মুক্তিযুদ্ধা দুখী মন্ডলের ৮৫তেও ভাতা জোটেনি

৮৫ বছর বয়সী দুঃখী মন্ডলের জীবন প্রদীপ নিভু নিভু অবস্থায় পৌছালেও মহান মুক্তিযুদ্ধের সক্রিয় সহযোগিতাকারী হিসেবে ভাতা জোটেনি। অভাবের তাড়নায় বাড়ি হতে উপজেলা সদর পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার রাস্তা পায়ে হেটে এসে কতবার যে, কতজনার দূয়ারে ধর্ণা দিয়েছে হতভাগ্য এই মানুষটি। কিন্তু ভাগ্য দেবীর সুদৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়নি সে।

ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের উত্তর পাড়ার মৃত কিতাব্দী মন্ডলের ছেলে দুখী। অভাবের সংসারে জন্ম গ্রহণ করায় বাবা মা নাম রাখেন দুখী। ছোট বেলায় সে পরের বাড়ি রাখাল, একটূ বড় হলে পেটে-ভাতে শ্রম দিয়ে জীবন ধারন করতে থাকে। ৪০ বছরের টগবগে যুবক দুঃখী দুখের দিনের অবসানের সোনালী স্বপ্নে বিভোর হয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের মহা নয়কের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ঘর ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশ্যে বের হন। ভারতের রানাঘাটে ইউথ ক্যাম্পে দীর্ঘ আড়াই মাস সহযোদ্ধাদের সাথে অবস্থান করে টায়ফাইড জ্বরে আক্রান্ত হলে ক্যাম্প কমান্ডারের নির্দেশে দেশে ফিরে আসেন।

সুস্থ্য হয়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের উত্তাল দিনগুলিতে যুদ্ধকালিন গ্রূপ কমান্ডার নূর উদ্দীন আহমেদের নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ গ্রহণ করেন। আলমডাঙ্গার আড়পাড়ার সম্মূখ সমরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন অপারেশনে তিনি গোলাবারুদ বহন ও সংবাদ আদান প্রদানের মত দায়িত্বপূর্ণ কাজ জীবনের ঝুকি নিয়ে নিষ্ঠার সাথে পালন করেন বলে গ্রুপ কমান্ডার নূর উদ্দীন আহমেদ এক সাক্ষাতকারে জানান। অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে মোঃ জান-ই আলম মন্টু, গেজেট নং-৩৪৭, মোঃ রবিউল ইসলাম, গেজেট নং-৪৪৮, মোহাম্মদ আলী, গেজেট নং-২৯০ ব্যক্তিবর্গ দুখী মন্ডলের মুক্তিযোদ্ধাদের সক্রিয় সহায়তাকারী হিসেবে লিখিত প্রত্যয়ন প্রদান করেন। এছাড়া উপজেলা কমান্ড কাউন্সিলের কমান্ডার মোঃ মহি উদ্দীন ও স্থানীয় ভায়না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইয়াকুব আলীরও অনুরূপ প্রত্যয়ন প্রদানের ডকুমেন্টে রয়েছে।

মাত্র ১০ শতক জমিকে সম্বল করে খেয়ে না খেয়ে কোন রকমে দিনপাত করেন এই হতদরিদ্র মানুষটি। পুরাতন টিনের ছাপড়া আর পাটখড়ির বেড়া দিয়ে ঘেরা একটি ভাঙাচোরা ঘরে কোন রকমে তার বসবাস। ২০১৩ সালে অবশিষ্ট ১০ কাঠা জমি ৪০ হাজার টাকায় বন্ধক রেখে নিজের চিকিৎসা এবং মেয়ে জামায়ের বাইনা মেটাতে ব্যয় করেন বলে তিনি জানান।

যাচাই বাছাই কমিটি, জেলা উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দুঃখী মন্ডলের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসবে বলে তিনি ব্যক্ত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *