Sat. Apr 20th, 2024

ঝিনাইদহ নিউজ

সবার আগে সর্বশেষ

হাতের সঙ্গেই হারিয়ে গেল ফিরোজের স্বপ্ন

1 min read

ঝিনাইদহ নিউজ ডেস্ক: চলন্ত বাসে ট্রাকের ধাক্কায় হাত হারানো রাজশাহী কলেজের ছাত্র ফিরোজ সরদার সুস্থ হয়ে উঠেছেন। রোববার তাকে ছাড়পত্র দেয়া হলে এক হাত ছাড়াই বাড়ি ফিরে যান তিনি।

হাসপাতালের অর্থপেডিক সার্জারি ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক ডা. আলমগীর হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ফিরোজ সরদারকে আমরা হাসপাতালে পাওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাই। এরপর অপারেশন সম্পন্ন হয়। হাসপাতালে তিনি নিবিড় পর্যবেক্ষণে ছিলেন। এখন সুস্থ আছেন। চলাফেরা করতে পারছেন। হাতের ক্ষত স্থানও এখন ভালো আছে। সোমবার তাকে দেখার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

রামেক হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার আগে ফিরোজ জানান, শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন ছিল তার। এজন্য প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে ২৮ জুন বগুড়ায় গিয়েছিলেন। সে স্বপ্ন তো পূরণ হলই না উল্টো আরো এক বছর পিছিয়ে গেলাম আমি। হাত হারিয়ে চলমান মাস্টার্স পরীক্ষায় অংশ নেয়া হয়নি তার। এখন কেবল অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ দেখছেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, আমার খুব ইচ্ছে ছিল একজন শিক্ষক হব। সরকারের কাছে আমার দাবি আমি যাতে এখন কোনো রকমে খেয়ে পড়ে থাকতে পারি সেই ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য আমাকে একটি প্রাথমিক শিক্ষকের চাকুরির ব্যবস্থা করে দিতে। পাশাপাশি আমি আমার পাশে পাওয়া কলেজের বন্ধু ও শিক্ষকদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার হাত হারানোর পর থেকে আজ পর্যন্ত কোনো বাস মালিক সমিতির নেতারা খোঁজ নেয়নি। তিনি পুলিশের কাছে দাবি করেন, তার মতো যাতে আর কাউকে হাত হারাতে না হয়। তাই এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলত শাস্তির দাবি জানান তিনি।

ফিরোজের পরিবারের অভিযোগ, ওই ঘটনায় তাদের কোনো প্রকার বিচারের খোঁজ দেয়া হয় না।

তার চাচা বলেন, আমরা জানি না পুলিশ কাকে ধরেছে কাকে ছেড়ে দিচ্ছে। দ্রুত এ মামালার আসামিদের গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

গত ২৮ জুন রাজশাহীগামী মোহাম্মদ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসকে অতিক্রম করার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা বেপরোয়া একটি ট্রাক এসে ধাক্কা দেয়। এতে ফিরোজ আহমেদের ডান হাতের কনুই পর্যন্ত কেটে পড়ে যায়। ওই দিন সন্ধ্যায় নগরীর উপকণ্ঠ কাটাখালি পৌর ভবনের সামনে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে দুর্ঘটনার পর থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফিরোজ। এ ঘটনায় ২৯ জুলাই নগরীর কাটাখালি থানায় মামলা করেন তার বাবা মাহফুজুর রহমান।

ফিরোজ আহমেদ রাজশাহী কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। তিনি বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার নামোইট গ্রামের মাহফুজুর রহমানের ছেলে। এরমধ্যে ‘মোহাম্মদ পরিবহন’ বাসের চালক ফারুক হোসেন সরকারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জব্দ করা হয়েছে বাস ও ট্রাক দুটি। তবে ট্রাকচালক ওয়াহিদুজ্জামান এখনো পলাতক। তাকেও গ্রেফতারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *